Description
মদ-গাঁজা-বেলফুল-বিরিয়ানি-পারফিউমের গন্ধমাখা কামাথিপুরা, ভেন্ডিবাজার, জি. বি. রোড, হাড়কাটা গলি, সোনাগাছির মতো আরো অনেক ছোটবড় নিষিদ্ধপল্লীর সংকীর্ণ ঘিঞ্জি গলি, রাস্তা আর ফুটপাত ধরে অনেকগুলো বছর নিঃশব্দে ঘুরে বেরিয়েছেন এক নাগরিক। অনেকটা সেই শার্টের বোতামের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কোনো মাইক্রো মিনি স্পাই ক্যামেরার মতো তার মন-মননে তুলে রেখেছেন একাধিক লালবাতি এলাকার বিবিধ পেশা, সেখানকার জবালার সন্তান, প্রাণাধিক প্রিয় না-মানুষী সব চারপেয়ে, ডানা ঝাপটানো পোষ্যের দলের দিন-গুজরানের ছবি। পেশার তাগিদে ছুটে গেছেন দক্ষিণ এশিয়ায় নারী পাচারের বৃহত্তম দুই ভরকেন্দ্রে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ আর নেপালেও। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার দরজায় কড়া নেড়ে দেখেছেন, ভদ্রলোকি ভাষায় ‘ওসব পাড়ার’ বাসিন্দা ‘খারাপ মেয়েদের’ সারাটা দিন আর সুখদুঃখের বারোমাস্যার।
উপলব্ধি করেছেন দেশ অথবা রাষ্ট্র নামক মহান এই প্রতিষ্ঠানে ‘আইন’, ‘প্রশাসন’ ইত্যাদি প্রবল গেরামভারি বাক্যগুলো থাকা সত্বেও পাঁচ থেকে লাখদেড়েক টাকায় কীভাবে বিকিয়ে যায় বছর পনেরো-ষোলোরমিনু-কাজল-পুস্প-জাহানারা-হাসিনা-নুরজাহান আর পদ্মরা। কীভাবে গ্রাম বাংলার ঘেঁটু-টুসু-ভাদু-ইতু-বাউল-ভাওয়াইয়া সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে প্রেথিত হচ্ছে আদিমতম, অশ্লীল আইটেম নাচের বিষচারা। সেসবই চোখের জুম লেন্সে তুলে নিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন বুকের বাঁ-পাশে সর্বদা যেটা ধুকপুক করে সেই লাল টুকটুকে ডেটা বেসটায় আর সেখান থেকে সোজা মগজে, যেখানে জমা রেখেছেন অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও।
শুধু মর্মান্তিক দমচাপা হতাশার অন্ধকার নয়, এই হাড় হিম করা আবছায়ায়, অসহায়তায় ঢাকা বিশাল সুড়ঙ্গটার শেষে দু-একটা ফাঁকফোকর দিয়ে ক্ষীণ আলোর দু-এক ফালি রেখার দেখাও মিলেছে। বলা যেতে পারে সিলভার লাইন। ফারজানা-রেশমা-অণিমাদিদের গল্পের গা বেয়ে যা চুঁইয়ে চুঁইয়ে নেমেছে—- তার আরেক নাম জীবন।
‘লালবাতিপাড়ার রোজনামচা’—- এই গ্রন্থের সবচেয়ে বড় দিক হল এর মানবিক আবেদন। নিছক গ্রন্থপাঠেই যার শেষ নয়। শুরু…
Reviews
There are no reviews yet.