Description
অস্থির হয়ে পড়েছিলেন মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র। এইসময়ে খবর এল কুন্তী এক ফুটফুটে শিশুপুত্রের মা হয়েছে। আর সেই প্রথম কুন্তীর প্রতি প্রবল হিংসা জাগল আমার মনে। মনে হল আমার জীবনের যেটুকু ভাল ছিল, তার সবটুকু নিয়ে চলে গেল ওই মেয়েটা। নতুন অতিথিকে কোনো উপহার পাঠানোর কথাও মনে ছিল না আমার।
সেদিন রাতে আমার ঘরে এলেন মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র। তাঁর উপস্থিতি, চলাফেরাই বলছিল তিনি কতটা ভেঙ্গে পড়েছেন। প্রথমে বেশ কিছুক্ষন কোনো কথা বলেননি উনি। তারপর আমাকে বললেন, “ঈশ্বর কি সারাজীবন আমার কপালে শুধু অপমান আর অশ্রদ্ধাই লিখেছেন গান্ধারী? তুমি তো পান্ডুপত্নীর আগে গর্ভধারণ করলে, তাও এখনও সন্তানকে আনতে পারলে না? এ কার দোষ? কার অক্ষমতা? তোমার চেয়ে তো একটা দাসীও পটু”।
ওনার শেষের কথাটায় কেঁপে উঠলাম আমি। রাগের মাথায় এ কি বললেন উনি! খোঁজ নিয়ে জানলাম যে দাসীকে ওনার কাছে পাঠিয়েছিলাম আমার গর্ভাবস্থার কারণে, সেও একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেছে, যুযুৎসু। আমার স্বামী আমার আগে এক দাসীর গর্ভে জন্মানো সন্তানের পিতা হলেন। একজন দাসী তাঁকে প্রথম সন্তানসুখ দিল! এ অনুভূতি যে কি কষ্টের!
সে রাতে মহারাজ চলে যাওয়ার পর একটা ভারী হামানদিস্তা লুকিয়ে নিয়ে এলাম হেঁশেল থেকে, আর তারপর প্রবল জোরে আঘাত করলাম আমার গর্ভে। জ্ঞান হারানোর আগে অনুভব করলাম রক্তের ধারা বয়ে যাচ্ছে আমার নিম্নাঙ্গে। গর্ভপাত ঘটিয়েছি আমি।
নারীর জন্ম কি শুধুমাত্র পুরুষজাতি র চাহিদা আশা আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করতে? সেই মহাভারতের যুগ থেকে আজও— প্রেক্ষাপট বদলালেও বদলায়নি নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিকোণ। আর তার গল্প শোনাচ্ছে মৌমিতা ঘোষের —“স্বর্গাদপী গরিয়সী”।
Reviews
There are no reviews yet.