Description
গত শতকের পঞ্চাশের দশক থেকে যে সব শিল্পী সুদীর্ঘকাল নিয়মিত প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ করে বাংলা গ্রন্থসজ্জাকে সমৃদ্ধ করে এসেছেন, সুবোধ দাশগুপ্ত অবশ্যই তাঁদের মধ্যে প্রথম সারির একজন।
ছবি আঁকার কোনও প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ তিনি নেননি। নিজের উদ্যমেই আয়ত্ত করেছেন এই শিল্পমাধ্যমটিকে এবং ক্রমশ পৌঁছেছেন এমন এক উচ্চতায়, যেখানে তিনি মৌলিক, বিশিষ্ট এবং লক্ষণীয় ভাবে বৈচিত্রময়।
সে যুগে হাতে গোনা কয়েক জন শিল্পীকে বাদ দিলে আর সকলেই ছিলেন খুব স্টিরিওটাইপড। অনেকেরই যথেষ্ট দক্ষতা ছিল। কিন্তু বুক ডিজাইন ও ইলাস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে তখনকার একটা সুনির্দিষ্ট চলতি ধারাকেই অনুসরণ করে চলতেন বেশির ভাগ শিল্পী। সুবোধ দাশগুপ্ত ছিলেন এই দলের বাইরে। সব সময়েই চেষ্টা করতেন নতুন ভাবে কিছু করার। তাই তাঁর কাজে বরাবরই পরীক্ষা-নিরীক্ষার একটা ছাপ লক্ষ করা যায়, যা তাঁর সমকালীন অধিকাংশ শিল্পীর থেকে তাঁকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করেছে।
তাঁর ড্রয়িং-এ বারবার ফিরে এসেছে ভাঙাচোরা ফর্ম, রুক্ষ শক্তিশালী রেখা আর টেক্সচারের অব্যর্থ প্রয়োগ। ফলে কাজগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে এক গভীর রহস্যময়তার। এবং এই রহস্যময়তার সঙ্গে প্রায় অবিচ্ছেদ্য ভাবে মিলে আছে এক আশ্চর্য কৌতুকবোধও। এই দুইয়ে মিলে তাঁর কাজে এমন এক বিশেষ চরিত্র এসেছে, এক রকমের সিরিওকমিক স্বাদ, যেটা একান্ত ভাবেই তার নিজস্ব। তখনকার অন্য কারও কাজে সে রকম বড় একটা চোখে পড়ে না।
অজস্র পত্রপত্রিকা ও বইয়ের সঙ্গে তাঁর আঁকা ছবি এক সময় বাঙালি পাঠকপাঠিকাদের কাছে খুবই উপভোগ্য হয়েছিল। অথচ আজকের প্রজন্মের কাছে সুবোধ দাশগুপ্ত সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি নাম। এর একটা প্রধান কারণ হল বাংলা বই ও সাময়িক পত্রে প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণের কোনও স্থায়ী সংগ্রহশালা এখনও অবধি এ রাজ্যে করে ওঠা সম্ভব হয়নি, যা থেকে আজকের তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে বিগত দিনের গ্রন্থশিল্পীদের অসামান্য সব কাজের পরিচয় ঘটতে পারে।
Reviews
There are no reviews yet.