₹600Original price was: ₹600.₹540Current price is: ₹540.
শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়—“ছবি তৈরীর প্রত্যেকটি স্বতন্ত্র বিভাগে আপনার সক্রিয়তা ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে। আপনি যখন কাজ শুরু করেন তখন আপনি সিনেমার প্রত্যেকটি অঙ্গে সক্রিয় ছিলেন না ।… কখন স্থির করলেন যে, এক এক করে সিনেমার প্রতিটি অঙ্গের দায়িত্ব আপনি নিজের হাতেই তুলে নেবেন?”
সত্যজিৎ রায়—“…চারুলতা থেকে। আমি উপলব্ধি করলাম, ক্যামেরার ভিতর দিয়েই অভিনেতাদের অ্যাকশন বা মুভমেন্ট সবচেয়ে ভালো বিচার করা যায়, যা পাশে চেয়ারে বসে করা যায় না। আমি দেখলাম তাতে অভিনেতাদেরও সুবিধা হয়। কারণ আমি তখন চলে যাই ক্যামেরার আড়ালে। ওরা আমায় দেখতে পান না। তাতে অভিনেতাদের সুবিধা হত। ওরা সহজবোধ করতেন। প্রথমদিকে সঙ্গীতের ক্ষেত্রে আমি কাজ করতাম প্রফেশনাল — প্রফেশনাল কম্পোজার বলবোনা — প্রফেশনাল মিউজিশিয়ানদের নিয়ে । আমার চারটি ছবিতে আমি কাজ করেছি রবিশংকরের সঙ্গে। কিন্তু তারা ছিলেন এসেন্সিয়ালি যন্ত্র সঙ্গীত শিল্পী, আসরে শিল্পী, প্রশিক্ষিত চলচ্চিত্র কম্পোজর নন। অর্থাৎ দু মিনিট সাত সেকেন্ড চলবে এমন সুর রচনা করার শিক্ষা তাদের ছিল না। বা ঐ রকম অনেককিছু। ফলে সব সময়ই সমস্যা ছিল, যদিও ওরা খুবই উদ্ভাবনীক্ষমতাসম্পন্ন। বিশেষত রবিশঙ্কর, যিনি অপুচিত্রত্রয়ীর জন্য কিছু চমৎকার সুর সৃষ্টি করেছিলেন, যা ব্যবহার করতে পেরে আমি খুবই আনন্দ পেয়েছিলাম । কিন্তু আমি যে পদ্ধতি ব্যবহার করতাম — ওরা আসতেন একদিন বা দুদিন এর জন্য । বাকি সময় তো ওরা সারা ভারত, সাড়া পৃথিবীর সফর করে বেড়াচ্ছেন, ওদের পাওয়া যেত দু-তিন দিনের জন্য। তার মধ্যে হয়তো ওরা একবার ছবিটাকে দেখে নিলেন, সবসময় যে পুরো ছবিটা দেখলেন তাও নয়, রবিশঙ্কর পথের পাঁচালীর অর্ধেক মাত্র দেখেছিলেন । তা থেকেই ওরা বিশেষ কিছু রচনা করে ফেলতেন। কিন্তু বাকি সময় আমার আগ্রহ বেশি থাকতো ওদের যন্ত্রগুলো কাজে লাগানোয়। আমার আগ্রহ ছিলো রবিশংকরের সেতারে আলী আকবরের সরোদে। আমার আগ্রহ ছিলো বিশেষ কিছু রাগে , যা আমি জানতাম আমার বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে কাজে দেবে। আমি তাই ওদের নিয়ে টানা তিন মিনিট চার মিনিটের এক একটা পিস বানিয়ে নিতাম। নানা মুড-এ নানা টেম্পোরায় নানা রাগে। পরে কাটিং রুমে প্রচন্ড কাজ থেকে যেত আমার। একটা দৃশ্যের সঙ্গে ঠিক তার উপযুক্ত সঙ্গীত মেলাবার চেষ্টায়। শেষ পর্যন্ত 1960 সাল নাগাদ, যখন আমি ‘তিন কন্যা’ করছি ,আমি স্থির করলাম, আমিই আমার ছবির সংগীত রচনা করব।”
শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেওয়া সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাৎকার থেকে সংগৃহীত।
Reviews
There are no reviews yet.