Description
অভী লক্ষ্য করল, নামটা শোনামাত্র কেঁপে উঠল রবিকাকা; মুখখানা ফ্যাকাশে হয়ে গেল তার। সে বলল, “আমি… আমি আমার স্বপ্নে দেখেছি তাকে! কী ভয়ংকর! আমি মাঝে মাঝেই ঘুমের মধ্যে দেখি, বিশাল চেহারার ওই রাক্ষসটা দাঁড়িয়ে আছে আগুনের বর্শা নিয়ে, তার চারপাশে জমে উঠেছে মরা মানুষের পাহাড়। সেই মৃতের স্তূপের মাঝখানে দাঁড়িয়ে দানবটা হাসছে হা-হা করে। আমার স্বপ্নেই আমি জানি, ওর নাম ‘শর্বর’। এ স্বপ্ন আমি প্রায়ই দেখি আর আমার ঘুম ভেঙে যায় ভোররাতে। কিন্তু আমি স্বপ্নে যাকে দেখি, তুমি তার নাম জানলে কোথা থেকে?”
মেঘবর্ণ ম্লান হাসল। “জানলাম, কারণ তুমি যা দেখো, তা শুধু স্বপ্ন নয়।…পরিপূর্ণ শান্তি নিয়তি আমাদের ভাগ্যে লেখেননি। তাই ওই দুঃস্বপ্নের হাত থেকে তোমার রেহাই নেই।“
***
সোনার পাখির লেজের পালক দিয়ে তৈরি হওয়া ওষুধ নাকি রাক্ষসদের শরীরে কাজে লাগে। কিন্তু হঠাৎ করেই এই মায়াজগতের প্রাণিটার প্রতি রাক্ষসদের নজর এত বেড়ে গেছে কেন? ওষুধ তৈরি ছাড়াও কি আরও কিছু গোপন কাজে লাগাচ্ছে ওরা এই সোনার পালকগুলোকে? রাক্ষস মারীচের আস্তানায় পালক কিনতে আসা আপাদমস্তক কালো পোশাকে ঢাকা রহস্যময় লোকটা আসলে কে? তাহলে কি সত্যিই মানুষদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি গোপনে শুরু করে দিয়েছে ওরা?
আর শর্বর?
হিংস্র রাক্ষসদের নেতা ভয়ানক যোদ্ধা শর্বরকে গত যুদ্ধের শেষে বন্দী করে রেখে আসা হয়েছিল এমন এক গোপন জায়গায়, যার সন্ধান কেউ জানেনা। কিন্তু গুপ্তচর খবর আনছে, নিষ্ঠুর শর্বরকে মুক্ত করার জন্য রাক্ষসদের পরিকল্পনা তৈরি। মায়াদয়াহীন শর্বর যদি একবার ছাড়া পায়, প্রতিশোধ সে নেবেই – প্রলয় ঘটাবে মানুষের জগতে। রাক্ষসদের তরফে ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়ে গেছে তার প্রথম পদক্ষেপ – যে গুপ্তচর তাদের সমাজ থেকে গোপনে খবর এনে দিত মানুষদের কাছে, ‘সুপ্তসর্প’ মায়া প্রয়োগ করে তাকে হত্যা করেছে তারা, আর তার মৃতদেহ রেখে দিয়ে গেছে শত্রুশিবিরের সামনে।
এই অবস্থায় কিশোর অভী এসে পড়েছে ভীত, সন্ত্রস্ত মানুষদের শিবিরে। আশার কথা শুধু একটাই, মহাবীর যোদ্ধারা তাদের শেখাচ্ছেন কীভাবে আত্মরক্ষা করা যায় রাক্ষুসে আক্রমণ থেকে। রাক্ষসরা মায়াযুদ্ধে ওস্তাদ হতে পারে, কিন্তু তাই বলে মানুষরাও সম্মুখযুদ্ধে নেহাৎ কম যায় না। যুদ্ধ যদি লাগেই, বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণ অভীরা কেউ করবে না, তা নিশ্চিত।
কিন্তু যদি সেই ভবিষ্যদ্বাণীর প্রলয়যোদ্ধা একবার আবির্ভূত হয়, কেউ রক্ষা পাবে না।
Reviews
There are no reviews yet.