Description
গ্রন্থনির্মাতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
শিলাদিত্য সিংহ রায়
শিলাদিত্য সিংহরায়। প্রথম এই নাম জানতে পারি যে বইটির সূত্রে, তার নাম — পুরনো আখরগুলি। এবং মুশায়েরা থেকে প্রকাশিত। শেফালী মৈত্রকে লেখা প্রদ্যুম্ন ভট্টাচার্যের চিঠিগুলির এক সংকলন। বইটা প্রথম দেখেই চমকে উঠেছিলাম। বিষয় অনুযায়ী যে এরকমভাবে একটা বইয়ের প্রচ্ছদ করা যায় — এ অবিশ্বাস্য! প্রদ্যুম্নবাবুর লেখা একটি ইনল্যান্ড লেটারের সামনেটাই শুধু প্রচ্ছদ! প্রায় সেই একই সাইজ, আর বইটি ওজনেও খুব হালকা। ফলে বইটা হাতে নেওয়ার মুহূর্তেই মনে হয় যে, আমি যেন কোনো বই হাতে নিইনি, সরাসরি যেন হাতে তুলে নিয়েছি প্রদ্যুম্নবাবুর লেখা চিঠিটিই। এই হলো গ্রন্থনির্মাণ। বই পড়ার আগেই বইয়ের আত্মার সঙ্গে পাঠককে একাত্ম করে দেওয়া। কিন্তু এইরকম একটা ম্যাজিক বেরোলো কার মাথা থেকে? একটু খোঁজ করতেই বেরিয়ে পড়ে সেই নাম — শিলাদিত্য সিংহরায়। তাহলে তো এই মানুষটি সম্পর্কে একটু খোঁজখবর নিতে হয়। আর কী কী কাজ আছে? এরকম সময়েই চোখে পড়ে অভিযানের কর্ণধার মারুফ হোসেনের পোস্ট। অভিযান থেকে প্রকাশিত হয়েছে একটি বই –‘গ্রন্থনির্মাতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মননে ও যাপনে’, সম্পাদনা শিলাদিত্য সিংহরায়। ফলে আবার একটা সূত্র পেয়ে যাই। আর বইটি প্রকাশের আগে থেকেই মারুফ এ বইয়ের বিভিন্ন অংশ থেকে পোস্ট করছিল ফেসবুকে। পড়তে পড়তে আরও গাঢ় হয়ে উঠছিল মানুষটির সম্পর্কে মুগ্ধতা। তারপর তো হাতে এলো সেই বই। খোঁজখবর নিয়ে এর মধ্যেই খানিকটা জেনেছি মানুষটির সম্পর্কে, তাঁর কাজের সম্পর্কে। পরিচয় না-থাকা সত্ত্বেও রীতিমতো অনুরাগী হয়ে পড়লাম মানুষটির। ভাবলাম ফেসবুকে কি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাবো? আদৌ কি পাত্তা দেবেন বা একসেপ্ট করবেন ওঁর মতো একজন জাঁদরেল মানুষ? যাক গে, যা হয় হোক, বড়জোর না হয় প্রত্যাখ্যান করবেন বন্ধুত্ব! বুক ঠুকে আগে পাঠিয়ে তো দিই প্রস্তাব! এবং কী আশ্চর্য, উনি দিব্যি একসেপ্টও করে নিলেন।
কিছুদিন আগে, আমাদের এক বন্ধু অসুস্থ। তাকে দেখতে হাসপাতালে গেছি। সেখানেই আশ্চর্যভাবে আলাপ হয়ে গেল এই মানুষটির সঙ্গে। আসলে, ওনার নাম শুনেই প্রায় লাফিয়ে গিয়ে আলাপ করলাম আমি। শুধু কাজ নয়, ভালো লেগে গেল মানুষটিকেও। এমনকি প্রায় অবিশ্বাস্য মনে হলেও, উনি ওঁর নির্মিত আরেকটি বাংলা বই উপহার দিতে চাইলেন আমায় — শেফালী মৈত্রর লেখা ‘রবীন্দ্র-নৃত্যনাট্য : একটি নারীবাদী পাঠ’। এবং যথারীতি আবার সেই ভালোলাগা।
বাংলা বই নিয়ে খুব কমই কাজ করেছেন যামিনী রায়ের দৌহিত্র, মিতবাক আর সুমিষ্টস্বভাব এই প্রতিভাবান প্রকাশনাশিল্পী। ভাবতে ইচ্ছে করে, ভবিষ্যতের আরও অনেক অনেক বাংলা বই এখন শুধু ভ্রূণ হয়ে অপেক্ষা করছে ওঁর স্পর্শের জন্য, ওঁর হাত ধরেই অপরূপ জন্ম নিতে চায় তারা, চায় পাঠকের আকাশে ডানা মেলে দিতে…
Reviews
There are no reviews yet.