Description
অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে সুমন্ত। ওর কোলে কে ওটা? থুতু ছেটাচ্ছে বাচ্চাটা ওর দিকে। কাঁচের ফুলদানিটা ছুঁড়ে মারল বাচ্চাটার দিকে। সারা ঘরে কাঁচ ভর্তি। থরথর করে কাঁপছে লালিমা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে পা
দু’টো। পাল্টে যাচ্ছে ঘরের মানচিত্রটা। সুসজ্জিত ডাইনিং, নরম সোফা, মাথার ওপরে ঝুলতে থাকা দামী ঝাড়বাতি। সব কিছুর মধ্যে দাঁড়িয়ে
কেতাদুরস্ত পোশাক পড়া একটা লোক চিৎকার করে বলছে —
“এতটা স্বার্থপর তুমি লালিমা। ছিঃ!” আরো কত কে। কারুর নাম মনে পড়ছে না লালিমার। নিজেকে বশে রাখতে পারছে না কিছুতেই। ভেঙে ফেলছে
ঘরের এক একটা জিনিস। সারা শরীর রক্তাক্ত হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
সারি সারি চেনা মুখোশে ঢাকা অচেনা মুখ। সবাই মিলে তারস্বরে বলছে — “ছিঃ! ছিঃ! ছিঃ!”
দু’হাত জোর করে ধীরে ধীরে পিছিয়ে যাচ্ছে লালিমা। সামনেই একচিলতে ব্যালকনি। তার ওপাশেই নীল, শান্ত, স্নিগ্ধ আকাশটা যেন
দু’হাত বাড়িয়ে ডাকছে ওকে। কী যেন গানটা গায় মা! গুনগুন করে ওঠে
লালিমা — “এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়।”
পিছনে একবার ঘুরে তাকাল লালিমা। সারি সারি সারি চেনা অচেনা মানুষ পঙ্গপালের মতো ধেয়ে আসছে ওর দিকে। ব্যালকনির রেলিংটাই তো শুধু! পেরোতে পারলেই নীল আকাশ। ঐ তো মা ডাকছে দু’হাত বাড়িয়ে। তার আটপৌরে, স্নিগ্ধ, সুন্দরী মা। রেলিংয়ের ওপর পা রাখল লালিমা। এই তো হালকা লাগছে বেশ! ফাঁকা ফাঁকা হয়ে আসছে মাথার ভিতরটা। আর কোনো ভয় নেই। একটু একটু করে ফিকে হয়ে যাচ্ছে পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা মুখগুলো। শরীরের জ্বালা-পোড়াগুলোও মিলিয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। দূর থেকে ভেসে আসছে মন্ত্রপাঠ:
অসতো মা সদগময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়ঃ
মৃত্যুর্মা মৃতম গময়ঃ শান্তি শান্তি ওঁ
শান্তি ওঁ, শান্তি ওঁ, হরি ওঁ তৎসৎ,
শান্তি ওঁ, শান্তি ওঁ, হরি ওঁ তৎসৎ।
Reviews
There are no reviews yet.