Description
সে সময়টা ছিল খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ । সুবে বাংলা বিহার উড়িষ্যার সীমানায় উপর্যুপরি বর্গী আক্রমণ সম্প্রতি সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করেছেন বাংলার প্রৌঢ় নবাব আলিবর্দি। এই সময়েই রাঢ় বাংলার মল্লভূমি থেকে নবাবী রাজস্ব বিভাগের এক সাধারণ কর্মচারী পদ্মনাভ রায়ের পুত্র তরুণ উচ্চাভিলাষী যুবক নন্দকুমার রায় এলেন মুর্শিদাবাদে, নবাবী দরবারে কর্মপ্রার্থী হয়ে । নিযুক্ত হলেন প্রাসাদ অধিরক্ষী সেনাদলের সহ-সেনাপতি। পরবর্তী তিন দশকের বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাস ঘটনাবহুল । আলিবর্দির মৃত্যুতে বাংলার মসনদে তরুণ নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা ; নবাবের বিরুদ্ধে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ষড়যন্ত্রে শরিক বাংলার অভিজাতবর্গের সঙ্গে হুগলীর ফৌজদার নন্দকুমার ; পলাশীর যুদ্ধের পরে মীর জাফরের উত্থান ও পতন ; মীর জাফর জামাতা মীর কাশিমের উত্থান ও ইংরেজের সঙ্গে বক্সারের যুদ্ধে পতন ; দিল্লীর বাদশাহের সঙ্গে এলাহাবাদ চুক্তির ফলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাংলা বিহার উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ । এরই মধ্যে নন্দকুমার থাকেন সর্বদা শাসকের আস্থাভাজন। তিনি আলিবর্দি, মীর জাফর তথা মীর কাশিমের পরামর্শদাতা, স্বয়ং ক্লাইভ তাঁকে ‘ব্ল্যাক কর্নেল’ নামে সমাদর সম্বোধন করেন ! ওয়ারেন হেস্টিংসকে সরিয়ে বাংলা প্রেসিডেন্সীর গভর্নর ভ্যান্সিটারট তাঁকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ান নিযুক্ত করেন ! তিনি সাধারণ নবাবী রাজস্বের সংগ্রাহক থেকে হুগলীর ফৌজদার, পলাশীর যুদ্ধের ষড়যন্ত্রের শরিক, তিনহাজারী ফৌজদার থেকে হুগলী, নদীয়া, বর্ধমানের নবাবি দেওয়ান, পরবর্তী কালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ান, দিল্লীর বাদশাহের খেতাবে মহারাজা, বাংলার গভর্নর জেনারেল হেসটিংসের বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপের অভিযোগকারী, স্বয়ং জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত ব্রিটিশ ভারতের সুপ্রীম কোর্টের প্রথম প্রকাশ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সম্ভ্রান্ত নাগরিক । মহারাজা নন্দকুমারের এহেন বৈচিত্র্যময় জীবনের ওঠাপড়ার চাঞ্চল্যকর কাহিনী নিয়ে সিদ্ধার্থ সান্যালের নাতিদীর্ঘ উপন্যাস।
Reviews
There are no reviews yet.