Description
বনামিয়ের গুলি ছুড়ল। তারপর পিছন ফিরে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটল আস্তানার দিকে। তার ধাবমান দেহের এপাশ দিয়ে ওপাশ দিয়ে সাঁ সাঁ করে উড়ে গেল অনেকগুলো বর্শা। বনামিয়ের একটা ঘরের খুব কাছাকাছি এসে পড়ল- আর একটু গেলেই সে দেয়ালের আড়ালে দাঁড়িয়ে আত্মরক্ষা করতে পারবে। কিন্তু বেচারার উদ্দেশ্য সফল হল না, তার বাম ঊরুর ওপর বিদ্ধ হল একটি বর্শা- বনামিয়ের মাটির ওপর ছিটকে পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেল।
ইতিমধ্যে রাইফেলের শব্দে আমেরিকান আর জার্মান সৈন্যদের ঘুম গেছে ভেঙে, চটপট রাইফেল নিয়ে তারা ছুটে এসেছে অকুস্থলে- নিকটবর্তী অরণ্যের ভিতর দিয়ে ঝোপঝাড় ভেদ করে আঙুলের চাপে চাপে রাইফেলের মুখ থেকে ছিটকে পড়েছে তপ্ত বুলেট বৃষ্টিধারার মতো!
সেই দারুণ অগ্নিবৃষ্টির মুখে লুটিয়ে পড়ল কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ যোদ্ধা, বাকি সবাই তাড়াতাড়ি জঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে পড়ল। শ্বেতাঙ্গরা এবার অদৃশ্য শত্রুদের লক্ষ করে হাতবোমা ছুড়ল- ঘন জঙ্গল আর ঝোপঝাড়ের ভিতর প্রচণ্ড শব্দে ফাটাতে লাগল বোমাগুলো।
নিগ্রো যোদ্ধারা পিছিয়ে গেল। অন্ধকার অরণ্যের ভিতর তাদের দেহগুলো শ্বেতাঙ্গদের চোখে পড়ল না, কিন্তু দ্রুত ধাবমান পদশব্দ তাদের জানিয়ে দিলে শত্রু এখন প্রাণ নিয়ে সরে পড়ছে।
আহত জার্মান সৈন্যের দেহটাকে ধরাধরি করে তারা একটা ঘরের ভিতর নিয়ে এল। বনামিয়ের পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল, তার ক্ষতস্থানে ওষুধ লাগিয়ে বেঁধে দেওয়া হল। বনামিয়ের তখন দারুণ যাতনায় আর্তনাদ করছে, তাকে একটা মরফিয়া ইঞ্জেকশন দিতেই সে ঘুমিয়ে পড়ল – অন্তত কয়েক ঘণ্টার জন্য আঘাতের যন্ত্রণা থেকে সে মুক্তি পেল।
ময়ূখ চৌধুরীর কাহিনী মানেই অ্যাকশন রোমাঞ্চ ও গতিময়তা। কখনো তাঁর কাহিনীতে নায়ক হিংস্র পশুর বিরুদ্ধে যোদ্ধা,আবার কখনো বা তাঁর গল্পের নায়ক কোনো প্রাচীন ঐতিহাসিক চরিত্র যিনি শত্রু মোকাবিলায় চালনা করছেন নিজের অস্ত্র। শুধুমাত্র অ্যাকশনই নই তার কাহিনীতে উঠে এসেছে নানান ঐতিহাসিক তত্ত্ব তথা তথ্য। পাঠকমনকে জয় করা এই সব কাহিনী সংগৃহীত হয়েছে ময়ূখ চৌধুরী রচনা সমগ্রের তিনটি খন্ডে।
Reviews
There are no reviews yet.