Description
মাকে শান্ত করে বসিয়ে বলতে শুরু করেছিল দয়িতা,—মা তুমিতো ইকোনমিক্স নিয়ে গ্রাজুয়েশন করেছ, কী দারুণ ইংলিশ লেখ তুমি, রাতে আমি ভয় পেলে তুমিই তো সাহস দাও। আমি জানি তুমি সব পারবে। বাপি যাদের গল্প আমাদের কাছে করে তাদের কাছে যাব আমরা। চোখের সামনে মালিনী দেবীর মধ্যের পরিবর্তন টা লক্ষ্য করছিল দয়িতা। আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছে সোজা হয়ে উঠে দাঁড়িয়েছিল মা। সেই শুরু, সেদিনই বাস্তবের মাটিতে প্রথম পা রেখেছিল ক্লাস নাইনের মেয়েটা। বাপি মায়ের আদরের বাইরে স্যার ম্যাডামদের স্নেহ শাসনের বাইরেও যে একটা পৃথিবী আছে তা জানতে শিখেছিল সে। রাজনীতির কূটকাচালী আর দাঁত নখ বের করে গিলতে আসা সমাজটাকে সেদিনই প্রতক্ষ্য করেছিল সে। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার ফলাফলই ওকে শৈশব থেকে প্রাপ্তবয়স্ক করে তুলেছিল। যে বাপি কারোর কাছে কোনোদিন পাঁচটা পয়সা চুরি করেনি তাকেও যে অ্যারেষ্ট করা যায় সেটাই আশ্চর্য লেগেছিল দয়িতার। মায়ের সাথে সেদিন এক অজানা উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল দয়িতা। এস ডি ও অফিসে যখন পৌছালো তখন মাথার উপর সূর্য। অফিসের বাইরে মা কাঁপা হাতে অনেকদিন পর একটা দরখাস্ত লিখল। কলেজ লাইফের পর আর কোনো অ্যাপ্লিকেশন লেখার প্রয়োজন হয়নি মায়ের। বিষয় বলতে বিনিত অনুরোধ করা হচ্ছে তার হাসব্যাণ্ডের প্রকৃত দোষটা তাকে জানানো হোক।
এস ডি ও সাহেবের ঘরে অ্যাপ্লিকেশনটা জমা দিয়ে ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করেছিল দয়িতা আর ও মা। উদগ্রীব হয়ে তাকিয়ে ছিল ব্রাউন দরজার গতিবিধির উপর। তারপরই কে একজন ভিতর থেকে ডাকল প্রবোধ ঘোষের বাড়ির লোক কে আছেন? স্যার ভিতরে ডাকছেন। অন্যমনস্ক মালিনীদেবীর হাতে টান দিয়েছিল দয়িতা। ঘরে ঢুকতেই একজন পুরুষ বললেন আসুন মিসেস ঘোষ বসুন!
কোন দুঃস্বপ্ন অপেক্ষা করে আছে এই ঘরে দয়িতার জন্য? কি হতে চলেছে মালিনীদেবীর শেষ ভাগ্যে। প্রবীরের শেষ পরিনতি কি হবে! জেল নাকি মুক্তি? রাজনৈতিক বিষবাষ্পের উপরে উঠে তিনি কি নিতে পারবেন মুক্তির নিশ্বাস? অর্পিতা ঘোষের পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস—“প্রাণের আলাপ”। লালমাটি প্রকাশন
Reviews
There are no reviews yet.