PRANER ALAP

290 261

তোমার কথাই তো শেষ কথা নয়, অরিত্র! আমিও তুতুনের মা, তাই আমি ঠিক করব ও কোথায় পড়বে। উমারানিদেবীর যত না বয়স হয়েছে, শরীর ভেঙেছে তার থেকেও বেশি। বাতের ব্যথা টা মাঝে মাঝে চাগাড় দিচ্ছে। তাই মায়ের ভরসায় তুতুনকে ফেলে সারা দিনের জন্য বেরিয়ে যাওয়া টা এবার সত্যিই অসম্ভব। অরিত্র পরিষ্কার গলায় বলল, তাহলে এক কাজ করো দয়িতা, তুমি বরং এবারে তোমার মায়ের ভূমিকা পালন করো। তোমার লেকচারশীপটা ছেড়ে দাও, তোমার বাইরের ইনভলভমেন্ট টা বাতিল করে দাও, তুতুনকে মানুষ করো। দয়িতা রেগে গিয়ে বলল, কেন অরিত্র, চাকরি করা মায়েদের ছেলে মানুষ হয় না?
না তা হয়, তবে যেসব মায়ের কাছে ঘরের থেকে বাইরের পৃথিবীতে আপন হয় তাদের সন্তান মানুষ হয় না।
টানা সাত দিন টানাপোড়েনের পর দয়িতার মতামত সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে অরিত্র সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল ছেলেকে কোথায় পড়াবে। হিম শীতল গলায় বলল আমি চাই ও তোমার থেকে দূরে থাক, তোমার জীবনের স্বেচ্ছাচারিতা ওর মধ্যে প্রবেশ না করুক। গায়ে কাঁটার মতো বিঁধে ছিল অরিত্র বলা প্রতিটা শব্দ।
প্রাণের আলাপ
এই উপন্যাসের প্রতিটা কালো অক্ষর বলবে, দয়িতা ,অরিত্র, শ্রেয়ানের মনের মধ্যে থাকা অসংখ্য অনুভূতির গল্প। অনুভূতিদের তো শুধু পাঠ করলে হয়না, তাদের অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করতে হয়।
দয়িতা কিসের মোহে লেকচারারের চাকরি ছেড়ে, তিলোত্তমা ছেড়ে, মফঃস্বলে বাস করছে? সব পেয়েও কেন অরিত্রর মনে শূন্যতা বিরাজ করে?
শ্রেয়ানের গলায় কেন বিষন্নতার সুর! হাতের গিটারে শেষ বিকেলের বেলা শেষের গান বেজে ওঠে।
চির পরিচিত মানুষগুলোর সাথে হঠাৎই দেখা হয়ে যায় পথের বাঁকে। অনেক না বলা কথারা শব্দ খুঁজে ফেরে। অসংখ্য প্রশ্ন জমা হয় অভিমানের আড়ালে।

Publisher

Author

In stock

Title Range Discount
Winter Special 1 + 10%
Category:

Description

মাকে শান্ত করে বসিয়ে বলতে শুরু করেছিল দয়িতা,—মা তুমিতো ইকোনমিক্স নিয়ে গ্রাজুয়েশন করেছ, কী দারুণ ইংলিশ লেখ তুমি, রাতে আমি ভয় পেলে তুমিই তো সাহস দাও। আমি জানি তুমি সব পারবে। বাপি যাদের গল্প আমাদের কাছে করে তাদের কাছে যাব আমরা। চোখের সামনে মালিনী দেবীর মধ্যের পরিবর্তন টা লক্ষ্য করছিল দয়িতা। আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছে সোজা হয়ে উঠে দাঁড়িয়েছিল মা। সেই শুরু, সেদিনই বাস্তবের মাটিতে প্রথম পা রেখেছিল ক্লাস নাইনের মেয়েটা। বাপি মায়ের আদরের বাইরে স্যার ম্যাডামদের স্নেহ শাসনের বাইরেও যে একটা পৃথিবী আছে তা জানতে শিখেছিল সে। রাজনীতির কূটকাচালী আর দাঁত নখ বের করে গিলতে আসা সমাজটাকে সেদিনই প্রতক্ষ্য করেছিল সে। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার ফলাফলই ওকে শৈশব থেকে প্রাপ্তবয়স্ক করে তুলেছিল। যে বাপি কারোর কাছে কোনোদিন পাঁচটা পয়সা চুরি করেনি তাকেও যে অ্যারেষ্ট করা যায় সেটাই আশ্চর্য লেগেছিল দয়িতার। মায়ের সাথে সেদিন এক অজানা উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল দয়িতা। এস ডি ও অফিসে যখন পৌছালো তখন মাথার উপর সূর্য। অফিসের বাইরে মা কাঁপা হাতে অনেকদিন পর একটা দরখাস্ত লিখল। কলেজ লাইফের পর আর কোনো অ্যাপ্লিকেশন লেখার প্রয়োজন হয়নি মায়ের। বিষয় বলতে বিনিত অনুরোধ করা হচ্ছে তার হাসব্যাণ্ডের প্রকৃত দোষটা তাকে জানানো হোক।
এস ডি ও সাহেবের ঘরে অ্যাপ্লিকেশনটা জমা দিয়ে ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করেছিল দয়িতা আর ও মা। উদগ্রীব হয়ে তাকিয়ে ছিল ব্রাউন দরজার গতিবিধির উপর। তারপরই কে একজন ভিতর থেকে ডাকল প্রবোধ ঘোষের বাড়ির লোক কে আছেন? স্যার ভিতরে ডাকছেন। অন্যমনস্ক মালিনীদেবীর হাতে টান দিয়েছিল দয়িতা। ঘরে ঢুকতেই একজন পুরুষ বললেন আসুন মিসেস ঘোষ বসুন!
কোন দুঃস্বপ্ন অপেক্ষা করে আছে এই ঘরে দয়িতার জন্য? কি হতে চলেছে মালিনীদেবীর শেষ ভাগ্যে। প্রবীরের শেষ পরিনতি কি হবে! জেল নাকি মুক্তি? রাজনৈতিক বিষবাষ্পের উপরে উঠে তিনি কি নিতে পারবেন মুক্তির নিশ্বাস? অর্পিতা ঘোষের পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস—“প্রাণের আলাপ”। লালমাটি প্রকাশন

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “PRANER ALAP”

Your email address will not be published. Required fields are marked *