Description
“আমরা জানি কিছু সহমর্মী আর সমধর্মী বন্ধু জড়ো হলেই একটি ছোটোপত্রিকার আত্মপ্রকাশ অনিবার্য হয়ে পড়ে। আবার মতান্তরে মনান্তরে একদশকে সংঘ ভেঙে যায়। তাই কৃত্তিবাসী বন্ধুরা , যাদের বন্ধুত্ব ঈর্ষণীয় তাঁরাও টুকরো টুকরো হয়ে দূরে সরে যান। ঈর্ষার সুতো গুটোতে থাকেন। গোপনে ছুরিতে শান দেন। একজন হাংরি কবিকে রীতিমতো হুমকি দেন সুনীল।বলেন ‘কলকাতা শহরটা আমার, ওখানে গিয়ে আমি রাজত্ব করব’।কত গোপন ছলনা আর অসংলগ্নতা। পারস্পরিক অবিশ্বাস।তাই সন্দীপন সুনীলকে সতর্ক করে চিঠি দেন ‘কে আপনার বন্ধু, কে কে, এটা জানা দরকার।’ সমীর রায়চৌধুরীর চিঠিতে সুনীলের হাতে আসে বিস্ফোরক তথ্য – ‘চাইবাসায় থাকতেই তোকে বাদ দিয়ে শিল্পের সিংহাসনে বসার একটা ঘোরতর প্ল্যান উৎপল ও শক্তি অনেকদিন আগেই করেছিলো।’ প্রবীণ আর নবীন দুই তরফেই ছিল সিংহাসনের জন্য কাতর প্রার্থনা।সুনীলের বিদেশ বাসের সময় শরৎকুমার যখন সম্পাদনার দায়িত্ব পান তখন অনেক বন্ধু অসূয়াপ্রসূত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। সুনীল, শক্তির হঠাৎ জনপ্রিয়তায় ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন অনেকে। কবি শংকর চট্টোপাধ্যায় ঈর্ষাকাতর আস্ফালন করে মাঝেমধ্যে বলে উঠতেন ‘আমরা ওদের ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়েছি বলেই না…’। মন্তব্য নিস্প্রয়োজন।
এই আমাদের উত্তরাধিকার। আজকের তরুণ কবিকে ধান্দাবাজ বলার আগে আমাদের দেখতে হবে দলপতির ছায়া কতদূর বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। এরপরও আমাদের মনে পড়ে একজন প্রবীণ কবির কথা যিনি পকেটে তরুণদের কবিতা নিয়ে ঘুরতেন ভালো পত্রিকায় প্রকাশের জন্য। মনে পড়ে শান্তিনিকেতনের এক সভায় রীতিমতো তর্ক ও মতান্তরের পরেও সভাশেষে এক রিক্সায় চড়ে কথা বলতে বলতে বাড়ি ফিরছেন বুদ্ধদেব বসু এবং সুভাষ মুখোপাধ্যায়। তবু শিল্পের হাতে কতটুকু ক্ষতের উপশম আছে আমাদের জানা নেই। এখনও ‘পুরুষাঙ্গ’ বাঁধা দিয়ে আত্মপ্রকাশ আর আত্মপ্রতিষ্ঠার কত সুযোগ চারদিকে!”
Reviews
There are no reviews yet.