₹320Original price was: ₹320.₹288Current price is: ₹288.
এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া মানুষদের ভিড় বাড়ে। এক সময় যে দেশটা নিজের দেশ ছিল সেটারই বেড়া টপকায়। প্রত্যেক বছর বৃষ্টি আসে নিয়ম করে দু দেশেই। তবুও সীমান্তের দাগ মুছে যায় না সেই জলে।
ইন্দুবালা ভাতের হোটেল
বইটা পড়া শেষ করে ঠিক দুটো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেল,
১) পাঠক পাঠিকারা যখন একের পর এক ভালো বলে একটা বইকে হিট করায় তখন সে বইয়ের উপর নিশ্চিন্তমনে ভরসা করা যায়।
২) এযুগের পাঠক পাঠিকারা এখনো দাম দিয়ে বই কেনার ক্ষেত্রে ভালো লেখার কদর করতে জানেন।
ইন্দুবালা ভাতের হোটেল নিখুঁত বই নয়, কিন্তু এ বই বাংলা সাহিত্যে ক্লাসিক হওয়ার যোগ্যতায় সসম্মানে উত্তীর্ণ।
বইটি কেন নিখুঁত নয়?
এডিটের দরকার ছিল। কিছু জায়গায় প্লটের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বোঝা যায়, ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ে লেখা অধ্যায়গুলিকে একত্র করে তাড়াহুড়ো করে বই করা হয়েছে। যে নিষ্ঠা সহকারে লেখক লিখেছেন, তার সামান্যতম ব্যবহার করে আরেকবার পূর্ণাঙ্গভাবে লেখাটি তিনি যদি সমীক্ষা করেন, তাহলে সে ত্রুটিমুক্ত হয়ে লেখাটি কালোত্তীর্ণ হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় খুঁতটি আশ্চর্যভাবে লেখার শক্তিশালী দিকটাকেও তুলে ধরে। গল্পের প্লট সে অর্থে আহামরি কিছু নয়, দেশভাগের করুণচিত্র, নকশালের বহুব্যবহৃত আবহে ইন্দুবালা নামক এক হতভাগিনী নারীর না হার মানা অদম্য লড়াইয়ের কাহিনী। কিন্ত সেই অতিসাধারণ প্লটও যে অনবদ্য লেখনীর গুণে এরকম আশ্চর্যরকমের আকর্ষক হতে পারে, না পড়লে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।
এ কাহিনীতে ইন্দুবালার কষ্টের বিবরণ আছে, কিন্তু অহেতুক পাঠক/পাঠিকার সহানুভূতি আদায় করতে নয়; বাস্তবোচিত ভঙ্গীতে। গল্পের গতি শুরুতে কিছুটা গতানুগতিক হলেও লেখা যতো এগিয়েছে, লেখকের হাত খুলেছে। এ বইয়ের প্রধান সম্পদ লেখকের ভাষা। ঝরঝরে মায়াবী, কিন্তু কি অসম্ভব টানটান। একটা শব্দও তার ভাষাগত দক্ষতার অহেতুক অহংকারকে প্রকাশ করে না। সমগ্র কাহিনীতে বিভিন্নরকমের রান্নার পদের যে ডিটেলিং, তা এককথায় অনবদ্য। কিন্তু কোথাও জ্ঞান দেওয়া হয়েছে বলে মনে করার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। গল্পের বুননের সাথে রন্ধনপদ্ধতি, ইন্দুবালার জীবনের বর্তমান থেকে অতীতে মানসভ্রমণ বা উল্টোটা এত মসৃণভাবে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত যে পড়া শেষ করে পরে থাকে একরাশ অসীম মুগ্ধতা।
লেখক কল্লোল লাহিড়ীকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এরকম মানসিক তৃপ্তিদায়ক একটা উপহার দেওয়ার জন্য।
লেখককে একটাই অনুরোধ, আরেকটা এরকম লেখা হাত থেকে বেরোলে তবেই লিখুন। বড়ো আশা নিয়ে পড়তে চাই। আপনার অন্তত সস্তা ফুটেজ খাইয়ে, চ্যালা লাগিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে টিঁকে থাকবার প্রয়োজনীয়তা নেই।
Abhishek Guha Ray –
ইন্দুবালা ভাতের হোটেল
বইটা পড়া শেষ করে ঠিক দুটো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেল,
১) পাঠক পাঠিকারা যখন একের পর এক ভালো বলে একটা বইকে হিট করায় তখন সে বইয়ের উপর নিশ্চিন্তমনে ভরসা করা যায়।
২) এযুগের পাঠক পাঠিকারা এখনো দাম দিয়ে বই কেনার ক্ষেত্রে ভালো লেখার কদর করতে জানেন।
ইন্দুবালা ভাতের হোটেল নিখুঁত বই নয়, কিন্তু এ বই বাংলা সাহিত্যে ক্লাসিক হওয়ার যোগ্যতায় সসম্মানে উত্তীর্ণ।
বইটি কেন নিখুঁত নয়?
এডিটের দরকার ছিল। কিছু জায়গায় প্লটের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বোঝা যায়, ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ে লেখা অধ্যায়গুলিকে একত্র করে তাড়াহুড়ো করে বই করা হয়েছে। যে নিষ্ঠা সহকারে লেখক লিখেছেন, তার সামান্যতম ব্যবহার করে আরেকবার পূর্ণাঙ্গভাবে লেখাটি তিনি যদি সমীক্ষা করেন, তাহলে সে ত্রুটিমুক্ত হয়ে লেখাটি কালোত্তীর্ণ হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় খুঁতটি আশ্চর্যভাবে লেখার শক্তিশালী দিকটাকেও তুলে ধরে। গল্পের প্লট সে অর্থে আহামরি কিছু নয়, দেশভাগের করুণচিত্র, নকশালের বহুব্যবহৃত আবহে ইন্দুবালা নামক এক হতভাগিনী নারীর না হার মানা অদম্য লড়াইয়ের কাহিনী। কিন্ত সেই অতিসাধারণ প্লটও যে অনবদ্য লেখনীর গুণে এরকম আশ্চর্যরকমের আকর্ষক হতে পারে, না পড়লে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।
এ কাহিনীতে ইন্দুবালার কষ্টের বিবরণ আছে, কিন্তু অহেতুক পাঠক/পাঠিকার সহানুভূতি আদায় করতে নয়; বাস্তবোচিত ভঙ্গীতে। গল্পের গতি শুরুতে কিছুটা গতানুগতিক হলেও লেখা যতো এগিয়েছে, লেখকের হাত খুলেছে। এ বইয়ের প্রধান সম্পদ লেখকের ভাষা। ঝরঝরে মায়াবী, কিন্তু কি অসম্ভব টানটান। একটা শব্দও তার ভাষাগত দক্ষতার অহেতুক অহংকারকে প্রকাশ করে না। সমগ্র কাহিনীতে বিভিন্নরকমের রান্নার পদের যে ডিটেলিং, তা এককথায় অনবদ্য। কিন্তু কোথাও জ্ঞান দেওয়া হয়েছে বলে মনে করার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। গল্পের বুননের সাথে রন্ধনপদ্ধতি, ইন্দুবালার জীবনের বর্তমান থেকে অতীতে মানসভ্রমণ বা উল্টোটা এত মসৃণভাবে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত যে পড়া শেষ করে পরে থাকে একরাশ অসীম মুগ্ধতা।
লেখক কল্লোল লাহিড়ীকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এরকম মানসিক তৃপ্তিদায়ক একটা উপহার দেওয়ার জন্য।
লেখককে একটাই অনুরোধ, আরেকটা এরকম লেখা হাত থেকে বেরোলে তবেই লিখুন। বড়ো আশা নিয়ে পড়তে চাই। আপনার অন্তত সস্তা ফুটেজ খাইয়ে, চ্যালা লাগিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে টিঁকে থাকবার প্রয়োজনীয়তা নেই।