ASCHORJO BHROMON

180 162

” মদ্যপানের বিষয়ে সুনীলদার কোন লুকোছাপা বা শুচিবাই ছিল না। বহু লেখায় খোলাখুলি ভাবে তাঁর এই আসক্তির কথা লিখেছেন। কলকাতার রাস্তাঘাটে ইয়ার বন্ধুদের সঙ্গে মধ্যরাতের নানা কীর্তিকলাপের কথা তো সমস্ত সুনীল ভক্তরই জানা।
ব্যক্তিগত ভাবে আমি যাকে বলে social drinker। মাঝে সাঝে সামাজিক মেলামেশায় একটু আধটু গলা ভেজানো মন্দ লাগেনা। যদিও বাড়িতে প্রায় সব ধরণের পাণীয়ই মজুত রাখি, একলা বসে কখনও খাইনা। (সৌভাগ্যবশত দেবদাসের দশা কোনদিনও হয়নি)। আমেরিকাতে একটু বেশী বয়সে ফের ছাত্র হয়ে গিয়ে কিছু কারণে দুটি semester একা ছিলাম। চন্দনা প্রায় নমাস পরে এসেছিল। সেই দিনগুলিতে শুক্র শনিবার রাতে কোন পার্টিতে গিয়ে বেশ কয়েক গ্লাস বিয়ার গিলে বিরহ যাতনা উপশমের ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাতাম যদিও।
সুনীলদা আসার আগে অবশ্য cellar টা বেশ পরিপূর্ণই রেখেছিলাম। স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে বিয়ার ওয়াইন স্পিরিট সব ধরণের মদই ছিল আমার সংগ্রহে।
যদি কখনো bartender-এর কাজ করতে হয় মনে হয় প্রথম দিন-ই বরখাস্ত হব। মদ পরিবেশন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠিত নিয়মাবলী কিছুতেই মনে রাখতে পারিনা। অবধারিতভাব কোন গন্ডগোল করে ফেলি। কুলীন বা শৌখিন মাতালদের অনেক রকম কায়দা কানুন আছে। বিয়ারের গ্লাসের একরকম প্রলেতারিয়েত মার্কা চেহারা। উইস্কির গ্লাস আরেক ধরণের – বেশ আভিজাত্য মেশা গাম্ভীর্য আছে চেহারায়। বিভিন্ন ধরণের ওয়াইনের জন্য আবার নির্দিষ্ট গেলাস। লালের গ্লাসের বেশ পেটমোটা, তুলনায় সাদা ওয়াইনের গেলাস কিছুটা জিমে গিয়ে ওজন কমানো শরীর সচেতন যৌবন যায় যায় নারীর মতন। আর শ্যাম্পেনের flute গ্লাস তন্বী ‘সিলিম’ যুবতীর চেহারা মনে করিয়ে দেয়।
চা জলখাবারের পর সুনীলদাকে একটু ভয়ে ভয়েই জিজ্ঞেস করলাম পাণীয়ের ব্যাপারে। উনি নির্দ্বিধায় উইস্কি দিতে বললেন। তখনই করলাম একটা সেমসাইড গোল। বিয়ারের গ্লাসে উইস্কি ঢেলে ফেললাম! চন্দনা হাঁউ মাউ করে উঠল প্রত্যাশিতভাবেই।
সুনীলদা মুহূর্তে অবস্থাটা সামলে দিলেন। “শোন সিদ্ধার্থ, ওয়াইনের, শ্যাম্পেনের নির্দিষ্ট গেলাস আছে। উইস্কি কিন্তু যে কোন গ্লাসে খাওয়া যায়, এমন কি ভাঁড়েতেও।”
খালাসিটোলায় পোড় খাওয়া বিশেষজ্ঞ যে আমাকে অপ্রস্তুত অবস্থা থেকে রেহাই দেবার জন্য গপ্পোটি ফেঁদেছিলেন সে বিষয়ে সেদিনও কোন সন্দেহ ছিল না। আদতে নিয়ম ভাঙা মানুষ উনি। উনিই এই ধরণের যা ইচ্ছে নিয়ম বানাতে পারেন। সাহিত্যের সেই প্রায় Victorian যুগে প্রচলিত নানা সংস্কার ছুঁড়ে ফেলে নরনারীর শারীরিক মিলনের যে রকম খুল্লাম খুল্লা বর্ণনা উনি দিয়েছিলেন, যৌবন বয়সে আমাদের গায়ে কাঁটা ধরাতো। এরকম মানুষের কাছে ভাঁড়ে উইস্কি খাওয়া কোন ব্যাপারই নয়।
চলতি ভাষায় একটা কথা খুব চলে: “জাতে মাতাল, তালে ঠিক”। টানা উইস্কির মত কড়া ড্রিঙ্ক খেয়ে যাওয়া সত্তেও কোন সময়ে পা টলতে দেখিনি, বা অসংলগ্ন কথা বলতে শুনিনি। রসিকতা বোধও পুরোমাত্রায় সজাগ ছিল। বাড়িতে সান্ধ্য আসরের দিন কেউ সামনে এক গ্লাস জল রেখে গিয়েছিল। কথা বলতে বলতে উইস্কির বদলে জলের গ্লাসে চুমুক দিয়েই বলে উঠলেন “ওরে বাবা জল কে দিল আবার, নেশা হয়ে যাবে যে!”
মদ্যপানের কথাই যখন লিখছি স্বাতীদির কথাও একটু বলি। উনি খুবই পরিমিত এই ব্যাপারে। তবে অস্ট্রেলিয় ওয়াইনের বেশ প্রশংসা করেছিলেন। “
সিদ্ধার্থ দে।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের দুই দিকপাল – সুনীল গঙ্গাপাধ্যায় এবং শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। দুজনেই পশ্চিমবঙ্গের সেলিব্রিটিদের তালিকার একেবারে প্রথম সারিতে। লেখকের সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর ক্যানবেরার বাড়িতে এঁদের অতিথি হিসাবে পাবার কদিনের জন্য – যথাক্রমে ২০০১ ও ২০০৯ সালে।
তারই কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে খোয়াই পাবলিশিং হাউজের নিবেদন:
“আশ্চর্য ভ্রমণ”
ক্রিয়েটিভ ডিজাইনে: কৃষ্ণেন্দু মন্ডল।
Author

Publisher

In stock

Title Range Discount
Winter Special 1 + 10%

Description

ASCHORJO BHROMON

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “ASCHORJO BHROMON”

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ASCHORJO BHROMON
You're viewing: ASCHORJO BHROMON 180 162
Add to cart