Anish Deb
সাহিত্যিক অনীশ দেবের জন্ম ১৯৫১ সালে কলকাতায়। লেখালিখি শুরু করেন ১৯৬৮ সালে। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ– ঘাসের শীষ নেই, সাপের চোখ, তীরবিদ্ধ, জীবন যখন ফুরিয়ে যায় ইত্যাদি। সম্পাদনা করেছেন সেরা কল্পবিজ্ঞান, সেরা কিশোর কল্পবিজ্ঞান ইত্যাদি গ্রন্থ। তাঁর জনপ্রিয় বিজ্ঞান গ্রন্থ–- বিজ্ঞানের হরেকরকম, হাতে কলমে কম্পিউটার, বিজ্ঞানের দশদিগন্ত ইত্যাদি।
২০১৯ সালে কিশোর সাহিত্যে জীবনব্যাপী অবদানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যাসাগর পুরস্কারে সম্মানিত হন অনীশ দেব। এর আগে প্রাচীন কলাকেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৮) ও ডঃ জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ পুরস্কারে (১৯৯৯) সম্মানিত হয়েছেন তিনি।
নিজে বিজ্ঞানের ছাত্র। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক। অবসরের পর পড়িয়েছেন অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটিতে। শিক্ষক অনীশ দেবের সঠিক মূল্যায়ণে কোনও খামতি ছিল কি না জানা নেই। কিন্তু বাংলা পাল্প সাহিত্যের রচয়িতা হিসেবে উঠে আসা অনীশ দেবকে সাহিত্যের মূলস্রোতে জায়গা করে নিতে একটা লম্বা ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রাপথ পেরিয়ে আসতে হয়েছে। তাঁর অন্যতম গুণমুগ্ধ সৌভিক চক্রবর্তীর মূল্যায়ণে তাই ধরা পড়ে সেই যাত্রাপথের অক্লান্ত পরিশ্রমেরই ছায়া। সৌভিকের মতে, তথাকথিত ‘ধ্রুপদী’ ঘরানার লেখকরা যাঁকে ‘অন্ত্যজ’ বলে মনে করতেন, সেই ধরনের সাহিত্যের চর্চা করতে কোনোদিন লজ্জা করেনি তাঁর। বরং গর্ব করে বলেছেন, ‘সারাজীবন এগুলোই লিখতে চেয়েছি, লিখেছিও। যেদিন লিখতে পারব না, ‘ক্লোক অ্যান্ড ড্যাগার’ তাকে তুলে রেখে দেব।’
সৌভিকের মতো তাঁর গুণমুগ্ধরা অনেকেই অনীশ দেবের মধ্যে শার্লি জ্যাকসন, এফ পল উইলসন, জেমস এম কেইন, লরেন্স স্যান্ডার্স-এর মতো ক্রাইম, হরর, থ্রিলার এবং ওয়ান্ডার ওয়ার্ল্ডের বিশ্বজনীন লেখালেখির প্রচ্ছায়া দেখতে পেয়েছেন। অনীশবাবু নিজেও একান্ত সাক্ষাৎকারে তাঁর প্রিয় লেখকদের তালিকায় এঁদের রাখতে রাখঢাক করেননি। তবে স্যাঁতস্যাঁতে কলেজ স্ট্রিটের গুমটি দোকানের সামনে টাইম স্লিপের গল্প বলা অনীশ দেব সময়ের ভগ্নাংশেরও মুহূর্তকে ঠিক সেই ভাবেই অতীতে বা আগামীতে নিয়ে যেতে পেরেছেন যা খুঁজতে গিয়ে বাঙালিকে কেন জানি না অহেতুক ক্রিস্টোফার নোলান বা ডার্ক সিরিজের গুহার ভিতরে মাথা গুঁজতে হচ্ছে। কেন জানি না থ্রিলারের খোঁজে ডিজায়ারের তাড়নায় বাঙালিকে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় অন্য কোনও ভাষায়, অন্য কোনও খানে।
মাতৃভাষায় কল্পবিজ্ঞানের যে মোহময় খনি আর অপরাধের যে নিকষ কালো অন্ধকার জগত আর তন্ত্র, যন্ত্র, মন আর লাস্যের যে কুটিল সমীকরণ তৈরি করে গিয়েছেন অনীশ দেব, সেই নিরাময় জগতে বাঙালি নিশ্চয়ই আলোর খোঁজ পাবে একদিন। ততদিন না হয় সেই আদার ডায়মেনশন থেকে আপনি খেলাটা দেখুন। উপভোগ করুন এই দিকভ্রান্তদের পাঁচালি!
সূত্রঃ https://eisamay.indiatimes.com/eisamaygold/culture/bhoutik-aloukik-writer-anish-deb-passed-away-due-to-corona/story/82309196.cms
Wiki: https://en.wikipedia.org/wiki/Anish_Deb